প্রথম আলো - আবার ‘ডিজিটাল টাইম’?
Posted using ShareThis
খবরের কাগজের ভেতরের পৃষ্ঠায় এক কোনায় একটা খবর ছাপা হয়েছে এবং সেটা দেখে আমি আঁতকে উঠেছি। সেখানে লেখা হয়েছে, মার্চ মাসের ৩১ তারিখ ঘড়ির কাঁটার পরিবর্তন করা হবে (এটাকে কি এগিয়ে আনা বলা হবে, না পিছিয়ে দেওয়া বলা হবে—আমি সেটা বুঝতে পারি না বলে পরিবর্তন কথাটা ব্যবহার করছি)। কাজেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা যেন বিষয়টা লক্ষ রেখে পরীক্ষা দিতে যায়। কারণ ঘড়ির কাঁটার পরিবর্তনের কারণে সময়সূচিরও পরিবর্তন হয়ে যাবে।
আমাকে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে খবরটির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়েছে। নিজের চোখে দেখেও আমার বিশ্বাস হতে চায় না যে এই দেশে এ রকম গুরুতর একটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় একজন মানুষও নেই, যিনি পুরো ব্যাপারটা একবার ভেবে দেখবেন।
ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন বা বিদেশিদের ভাষায় ‘ডে লাইট সেভিংস’ আসলে বড়লোক দেশের এক ধরনের বিলাসিতা—গ্রীষ্মে দীর্ঘ একটা দিনে বিকেলে দিনের আলোয় তারা বেশি সময় ফুর্তি-ফার্তা করে, সে জন্য ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দেয়। শীতকালে সেটাকে আবার পরিবর্তন করতে হয়—বছরে দুবার এই কর্তন-কুর্দন তাদের দেশে মানিয়ে যায়, কিন্তু আমাদের এই দেশে? গত বছর সেটা পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং এ দেশে সেটা শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। লঞ্চঘাটে যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হতো, কয়টায় লঞ্চ ছাড়বে—অর্ধেক মানুষ বলেছে নয়টায়; অন্য অর্ধেক মানুষ বলেছে ১০টায়। দুজনেই সঠিক, কারণ বাংলাদেশের মানুষ সরকারের অবিবেচকের মতো নেওয়া একটা সিদ্ধান্তের কারণে দুটি সময় চালু রেখেছে। একটাকে তারা ধরেছে সঠিক সময়, অন্যটিকে তামাশা করে নাম দিয়েছে ডিজিটাল সময়। এই সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে সময় নিয়ে এই তুঘলকি কাণ্ডটি হচ্ছে এক ধরনের টিটকারি—সরকারের বড় বড় মানুষের মধ্যে এটা বোঝার মতো কেউ নেই, সেটা ভেবে আমি এক ধরনের আতঙ্ক অনুভব করি।
No comments:
Post a Comment